নিজস্ব প্রতিবেদন: হিন্দু ধর্মে সকল দেব দেবীর মধ্যে শক্তিরূপের অন্যতম প্রতীক হলেন মা কাল। মা এই রূপ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন নারী মমতাময়ী রূপের খোলস ত্যাগ করে যদি একবার রুদ্ররূপ ধারণ করেন তাহলে কী হতে পারে। একজন নারী কী ভয়ঙ্কর হতে পারেন তার প্রমাণ মিলেছে এই কালী রূপ দেখে। সকল অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার শেষ করার ক্ষমতাও রাখে তিনি।
মা কালীর যে মূর্তি আমরা দেখতে পাই তার প্রত্যেকটিতেই আমরা দেখি মা কালী ভগবান শিবের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এবং তার জিভ সমনের দিকে বেড়িয়ে আছে। আর তাই অনেকের প্রশ্ন কেন মা কালীর জিভ বেরিয়ে থাকে ? কেনই বা কালীর পায়ের নীচে শিব থাকে ? আপনি কি জানেন মা কালীর জন্ম কীভাবে হয়েছিল ?
কালিকা পুরাণ অনুযায়ী একসময় পৃথিবীতে চরম অত্যাচার শুরু করেছিলেন শুম্ভ এবং নিশুম্ভ দুই রাক্ষস। তাদের আক্রমণে পৃথিবীর মানুষ চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এমনকি তাদের আক্রমণের পরিধি শুধু পৃথিবীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না দেবলোকেও আক্রমণ করেছিলেন তারা এবং অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দেবতারাও দেবলোক ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।
ঠিক এমন সময় দেবতারা ভগবান বিষ্ণু,মহাদেব শিব এবং প্রজাপতি ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। আর তারপর সকল দেবতারা মিলে আদ্যশক্তি মহামায়ার উপাসনা করেন। মহামায়া অবতীর্ণ হলে তিনি দেবতাদের আশির্বাদ প্রদান করেন এবং অসুর নিধনে তার রুদ্র রূপ ধারণ করেন।
অসুর নিধনের পর মা তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন। আর সেই তান্ডব নৃত্যে কাঁপতে থাকে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল । দেবতারা যখন এই তান্ডব নিত্য দেখেন ভয় পান এবং তারা বুঝতে পারে পৃথিবীতে প্রলয় আসতে চলেছে যা তাদের পক্ষে রোধ করা সম্ভব নয়।
তখন দেবতারা ছুটে যান ভোলা মহেশ্বরের কাছে তখন মহাদেব সকলের অনুরোধ শুনে মা কালীর তাণ্ডবনৃত্য বন্ধ করার উদ্দশ্যে মায়ের পায়ের সামনে শুয়ে পড়েন। এরপর তাণ্ডব নৃত্য করতে করতে যখন মা কালী ভগবান শিবের বুকে পা দেন তখন এক প্রকার হুশ ফিরে পান।
তিনি দেখেন তিনি তার স্বামীর বুকে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তাই তখন হঠাৎ করে লজ্জায় তার জিভ সমনের দিকে বেরিয়ে আসে। আর ঠিক এই ভাবেই মায়ের চিরাচরিত সামনে জিভ বের করা মূর্তি প্রচলিত হয় এই পৃথিবীলোকে।