নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন রেড রোডের কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানেও রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের ছবিই কার্যত আরও একবার স্পস্ট হল। বুধবার সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রেড রোডের অনুষ্ঠানে প্রোটোকল মেনে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতি মেনে ক্যামেরার এক ফ্রেমে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার অধ্যক্ষকে দেখা গিয়েছে মাত্র মিনিটখানেকের জন্য। সেখানেও রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব ছিল ‘অলঙ্ঘনীয়’।
পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় হলেও তাতে খুব একটা আন্তরিকতার ছোঁয়া ছিল বলে মনে করছেন না অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত অনেকেই। এদিন অনুষ্ঠানস্থলে একদিকে বসেছিলেন রাজ্যপাল। একটু দূরে বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার অধ্যক্ষ। কিছুক্ষণ পর রাজ্যপালকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী উঠে দাঁড়ান। দু’জনের মধ্যে চলে নমস্কার-প্রতিনমস্কারের পালা। রাজ্যপাল ঝুঁকে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু একটা বলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের মন্তব্য বিনিময় কী নিয়ে হয়েছে বা আদও হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
এদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনিই ‘গার্ড অফ অনার’ নেন। মুখ্যমন্ত্রী পুলিস মেমোরিয়ালে মালা দেন। অনুষ্ঠান শেষেই রাজ্যপাল রেড রোড ছেড়ে চলে যান। পরে মুখ্যমন্ত্রী এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ অতিথি অভ্যাগতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিনের সংঘাতের সূত্রপাত হয় রেড রোডের অনুষ্ঠানের কিছু আগের মুহূর্তে। সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে মঙ্গলবার ছিল জাতীয় ভোটার দিবস। সেই উপলক্ষকে সামনে রেখে ওই দিন রাজ্যপাল বিধানসভা চত্বরে আসেন বি.আর. আম্বেদকরের মূর্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে। তারপরই রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল একের পর এক ক্ষোভ দাগেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।
তাঁর আক্রমণের নিশানায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার অধ্যক্ষ, রাজ্যের পদস্থ আমলারা। রাজ্যপাল যখন দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন অদূরেই দাঁড়িয়েছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে অধ্যক্ষ পুস্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান রাজ্যপালকে। রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া না জানালেও পাল্টা তোপ দাগেন অধ্যক্ষও। বুধবার রেড রোডের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন শীতল আচরণ বিধানসভার ঘটনারই পরোক্ষ প্রভাব বলে মনে করছেন রাজমৈতিক মহল।