নিজস্ব সংবাদদাতা :ইউক্রেন নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে নয়াদিল্লি বলেই মত বিশ্লেষকদের। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত মজবুত। সোভিয়েত জমানা থেকেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রুশ অস্ত্রের বড় খদ্দের ভারত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। একইসঙ্গে, চিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও মস্কোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আমেরিকার হয়ে ইউক্রেন নিয়ে সুর চড়িয়ে মস্কোকে বেজিংয়ের আরও কাছাকাছি ঠেলতে চায় না মোদি সরকার। বন্ধু দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না কেন্দ্র।
তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও এখনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেন সমস্যার সমাধান করতে হবে। পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।”
নয়াদিল্লি থেকে বিদেশমন্ত্রকে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীও বলেন যে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পক্ষে দিল্লি। কূটনৈতিক স্তরে লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, একবারের জন্যও ইউক্রেন সীমান্তে রুশ ফৌজের অবস্থান নিয়ে কোনও নেতিবাচক মন্তব্য করেননি নয়াদিল্লির প্রতিনিধিরা। ২০১৪ সালেও যখন ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া তখনও ভারত সেই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেনি।
এদিকে ইউক্রেন নিয়ে ভারতের অবস্থানে ‘খুশি’ রাশিয়া। রুশ দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেন ইস্যুতে নয়াদিল্লির ‘স্বাধীন, আদর্শপূর্ণ ও নিরপেক্ষ’ অবস্থানকে স্বাগত জানায় মস্কো। অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ও ফ্রান্সের ডাকা ইন্দো-প্যাসিফিক সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে ইউরোপ পৌঁছে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা ও ন্যাটো গোষ্ঠীকে না চটিয়েও বন্ধু রাশিয়ার মন রাখতে অত্যন্ত কৌশলে গোটা পরিস্থিতি সামলেছে মোদি সরকার।