বিশেষ প্রতিবেদন: বোমাটি ফাটিয়েছে চেন্নাই থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’, তারা জানিয়েছে, নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর এক কর্তা এবং তাঁর সহযোগীরা শাহরুখ খানের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন আরিয়ানকে মুক্ত করার জন্য। এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তাঁকে মিথ্যা অজুহাতে ফাঁসানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে, বাড়ানো হয়েছে রাজনৈতিক চাপ এবং ভীতি প্রদর্শনও।

মুম্বই পুলিশের কাছে সমীর ওয়াংখেড়ে লিখিত আবেদন করেছেন, তাঁকে যেন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানো না হয়। এই ২৫ কোটি টাকা ঘুষ কেলেঙ্কারি কি সেই ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ। শাহরুখ স্বীকার করুন আর নাই করুন, মহারাষ্ট্রের সরকারের আনুকূল্যে তিনি আরিয়ানকে ড্রাগ কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তি করার চেষ্টা করছেন। এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে বিজেপির হাতের পুতুল বলে বর্ণণা করা হয়েছে। শাহরুখের সঙ্গে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের যোগাযোগটি নিবিড়, সেই কারণেই কি সমীর ওয়াংখেড়ে আরিয়ানের মামলাটি আরও কঠোরভাবে দেখছেন।

ইতিমধ্যেই অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডের মেয়ে অন্যন্যা পান্ডেকে তিন দফায় নারকোটিক কন্ট্রোল বোর্ড জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এই জিজ্ঞাসাবাদে মুখ্য ভূমিকায় আছেন ওই সমীর ওয়াংখেড়েই। বলিউডে একটি ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সমীর ওয়াংখেড়ের স্ত্রী বলিউডের এক ফ্লপ নায়িকা। তাই তিনি বলিউডের প্রতি বদলা নেওয়ার জন্যই এতটা কঠোর। এর আগে রামগোপাল ভার্মা, অনুরাগ কাশ্যপের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পদের মামলাও করেছিলেন এই সমীর ওয়াংখেড়ে।

এছাড়াও মহেন্দ্র সিং ধোনি বিশ্বকাপ নিয়ে ফেরার সময় মুম্বইয়ের সাহার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রফিটি আটকে দিয়েছিলেন সমীর যথাযথ শুল্ক না দেওয়ার কারণে। ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের এই অফিসার সম্পর্কে খুব বেশি অভিযোগের কথা খুব বেশি শোনা যায় না। গত এক বছরে মুম্বইয়ের সাহার বিমানবন্দরে সমীর ওয়াংখেড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছেন। মুম্বইয়ের পুলিশ মহলে তাঁর চলতি নাম স্নিফার ডগ। যেখানে মাদকের সন্ধান মেলে সেখানেই পৌঁছে যান সমীর ওয়াংখেড়ে। বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মাদকাসক্ত হয়ে ওঠার পর এই সমীর ওয়াংখেড়েই মাদক সম্পর্কিত তদন্তে নামেন।
সমীর ওয়াংখেড়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বলিউডে চার ধরনের নেশা প্রচলত আছে। এগুলি হল, গাঁজা, হাসিস. মারিজুয়ানা ও এলএসডি, চার নম্বরটি ব্লট পেপার হিসেবেও পরিচিত।

এই নেশা করে বলিউড তারকারা তুরিও আনন্দে থাকেন। সমীর ওয়াংখেড়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক নামী টিভি সঞ্চলকও নিয়মিত আফগানিস্তান থেকে আসা গাঁজা সেবন করে অনুষ্ঠানে বসেন। গুজরাতে সাধারণ নির্বাচনের আগে সেই টিভি চ্যালেনে সমীর ওয়াংখেড়ের বাহিনী পৌঁছে গিয়েছিল। যদিও আপত্তিকর তাঁরা কিছু পাইনি। তবে সমীর ওয়াংখেড়ে থেমে থাকেন নি, বলিউডের মেকআপ রুমে পর্যন্ত তিনি হানা দিয়েছেন, ফলত রাজনীতিবিদদের রোষের মুখে পড়েছেন এই ওয়াংখেড়ে।

তবে তিনি দমে যাননি, আরিয়ানের মামলাটিই তার প্রমাণ, আর্থার রোডের জেলে আরিয়ানকে বাধ্য করেছেন জেলর খাবার খেতে, জামিন পাননি আরিয়ান। প্রথম দিকে বাইরে থেকে বিস্কুটের প্যাকেট আনিয়ে খাচ্ছিলেন। জেল কর্তৃপক্ষকে বলে সমীর ওয়াংখেড়ে সেটিও বন্ধ করে দিয়েছেন। তারকা পুত্র বলে কোনও বাড়তে সুবিধা আরিয়ান পান এমনটা চান না এনসিবি কর্তা।এই সব কারণেই সমীর ওয়াংখেড়ে এখন তোপের মুখে। ভাবা যায়, একজন এনসিবি কর্তা মুম্বই পুলিশের কাছে কাতর আবেদব জানাচ্ছেন তাঁকে যেন গ্রেফতার না করা হয়।