বিশেষ সংবাদদাতা : সুধীন চ্যাটার্জি, দিলীপ সেন, সাগর সেন, সুমন্ত ঘোষ, প্রদীপ নাগ, উদয়ন হালদার। আরও আগের প্রতুল চক্রবর্তী, লক্ষ্মীনারায়ণ ঘোষ, তারক সেন নামগুলো বললেই পুরনো দিনের ফুটবল অনুরাগীদের গায়ে স্বেদ – কম্পন – পুলকের অনুভূতি হবে। মেলভিন ডিসুজা কিংবা এস এস হাকিমের নাম শুনে সম্ভ্রম দেখিয়ে হাত কপালে ঠুকবেন সাত কিংবা আটের দশকের ফুটবল ফ্যান। এঁরা সবাই ছিলেন ডার্বির বিচারক মানে রেফারি। পাঁচ ছয়ের দশকে উত্তরপাড়ার প্রতুল চক্রবর্তীর নামে চুনী- পিকে দের হাঁটু কাঁপতো।
পরে উত্তরপাড়ার মাস্টারমশাই দিলীপ সেন ও তাঁর ভাই সাগর সেন দাপটে রাজ করেছেন ময়দানে। সুধীন চ্যাটার্জিকে ভয় পেতেন সব ফুটবলার। বাকিরাও কম যেতেন না। বেলঘরিয়ার স্কুলটিচার প্রদীপ নাগতো ছাত্রদের পড়ানোর মত ফুটবলারদেরও পড়াতেন। কলকাতা ডার্বির দুই দলের বায়নায় সাতের দশকে উড়ে আসতেন দিল্লির এস এস হাকিম কিংবা গোয়ার মেলভিন ডিসুজা। কিন্তু, ওই উড়ে আসাই সাড়। তখন ডার্বি খেলিয়ে বিচারকরা একশো টাকারও কম ভাতা পেতেন। ম্যাচের শেষে রেফারিস টেন্টে ফিরে ঘুগনি-পাউরুটি।
হাফটাইমে বড় ক্লাবের দাক্ষিণ্য হলে বড়োজোর একটা লেমনেড। বাস, আর কিছু নয়, না, জুটত বোনাস স্বরূপ বড় ক্লাবের সামর্থকদের গালিগালাজ আর ইট পাটকেল। তবে, সম্মান ছিল অনন্য। পাড়ায় লোকে আঙুল তুলে বলত, ওই দ্যাখ অমুক স্যার যাচ্ছেন। কাল, বড় প্লেয়ারকে রেড কার্ড দেখিয়েছেন! এই টুকুই যা সান্ত্বনা ছিল বিচারকদের। তাঁরা চতুর্থ শ্রেণীর ফুটবল নাগরিক। ডার্বি খেলিয়েও।