নিজস্ব প্রতিবেদনঃ কথিত আছে এই দেবকুণ্ড মন্দিরে এই নিয়মে পুজো করে স্নান করলে নাকি দাম্পত্য জীবন সুখের হয়। কারণ এই দেবকুণ্ড মন্দিরের সঙ্গে জড়িত মনসামঙ্গল কাব্য। বর্তমান দেবকুণ্ড মন্দির প্রাঙ্গণেই নাকি দেবতারা লখিন্দরের প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। দূর দূরান্ত থেকে নব দম্পতিরা এই মন্দিরে এসে বিয়ের টোপর-সহ বিভিন্ন সামগ্রীর পুজো দেন। তারপর মন্দিরের পাশে পুকুরে সেগুলি বিসর্জন দিয়ে স্নান করেন।
এখান থেকেই বেহুলা তাঁর স্বামী লখিন্দরকে জীবিত করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় থেকেই এই দেবকুণ্ড মন্দির তৈরি হয়। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমায় এখানে হয় পুজো। পুজো উপলক্ষে এখানে বিশাল মেলা বসে এখন। বর্তমানে এই জায়গাটি পুরাতন মালদহের নারায়নপুরে। এই নারায়নপুর গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে বেহুলা নদী। কথিত আছে এই নদীর উপর দিয়েই বেহুলা তাঁর স্বামী লখিন্দরের দেহ কলার ভেলায় করে নিয়ে গিয়েছিলেন।
বর্তমানে দেবকুণ্ড মন্দিরটি বিএসএফ ক্যাম্পের ভেতরে অবস্থিত। তাই বছরের অনান্য সময়ে এই মন্দিরে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। বছরের এই একটি নির্দিষ্ট সময়েই মন্দির খোলা হয়। সেই সময় বিএসএফের পক্ষ থেকে সমস্ত বাধা তুলে দেওয়া হয়। এইদিন সকলেই অবাধে ক্যাম্পের ভিতরে মন্দির ও মেলা দর্শনে যেতে পারেন।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও মহাসমারহের সহিত পালিত হলো দেবকুণ্ডের বাৎসরিক পূজো এবং মেলা ,এই মেলাকে ঘিরে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়।পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর ১৫৯ নম্বর বিএসএফ ক্যাম্পের ভেতরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায় নারায়ণপুরের ১৫৯ নম্বর বিএসএফ ক্যাম্পের ভেতরে বেহুলা নদীর ধারে একটি পুকুরে এই পূর্ণিমার দিনেই অনুষ্ঠিত হয় দেবকুণ্ডের মেলা এবং পূজা অর্চনা।
এই মেলায় মঙ্গল কামনার জন্য আসেন নব-দম্পতি অর্থাৎ যাঁদের নতুন বিয়ে হয়েছে তাঁরা স্বামী স্ত্রী এসে বেহুলা লক্ষিন্দরের ইতিহাস বিজড়িত এই পুকুরে বিবাহের টোপর-সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিসর্জন দিয়ে স্নান করে শুদ্ধি হয়ে পুজো করে এবং এই পুজো করলে নাকি নব দম্পতির বৈবাহিক জীবন সুখী হয়।
রেশমি সরকার জানান , দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এই মেলায় আসি পুজো দিতে। এই মেলায় বিশেষ মহত্ত্ব রয়েছে। লক্ষীন্দরকে এখানেই নাকি দেবতারা জীবন দান করেছিলেন। সেই থেকে এই পুকুরে স্নান ও পুজো করা রেওয়াজ শুরু হয়েছে। নব দম্পতিরা এসে তাদের নতুন বিয়ের থেকে যাওয়া বিভিন্ন সামগ্রী বিসর্জন দিয়ে বৈবাহিক জীবনের সুখ ও শান্তি কামনা করেন।