নিজস্ব প্রতিবেদনঃ পনেরো বছরের বেশি পুরোনো গাড়িগুলি বাতিলের কাজ শুরু করতে রাজ্যের সমস্ত দপ্তর ও বিভাগকে নির্দেশ দিল পরিবহণ দপ্তর। গত ৩১ মার্চ রাজ্যের পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহন এই ব্যাপারে একটি নির্দেশনামা জারি করেছেন। সব ক’টি সরকারি দপ্তরের সচিব তো বটেই, সেই সঙ্গে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পুরসভা, জেলাশাসক ও মহকুমা শাসক, পরিবহণ দপ্তরের বিভিন্ন বিভাগীয় কর্তা, রাজ্যের পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান- সবাইকে এই নির্দেশনামা পাঠিয়েছে পরিবহণ দপ্তর।
তার জেরে অবশ্য কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগের অফিসারদের। কারণ, বিভিন্ন দপ্তর মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার সরকারি গাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। পরিবহণ দপ্তরেরই প্রায় ১৮০০টি গাড়ি বাতিলের তালিকায়। পরিবহণসচিব তাঁর নির্দেশনামায় বলেছেন, ‘১৫ বছরের বেশি বয়সি গাড়িগুলি বাতিল করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক চলতি বছরের ১০ জানুয়ারিতেই নির্দেশ জারি করেছিল। সেই মতো এই ধরনের গাড়িগুলি বাতিলের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, এই সব গাড়ি বাতিলের পর যে সব নতুন গাড়ি কেনা হবে, তার উপর কর ছাড়ও মিলবে। পাশাপাশি, পুরোনো গাড়িগুলি বাতিল করে নয়া যান কেনা বা বাতিল করার প্রকারপদ্ধতি ঘিরে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন, সেই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীন ডির্পাটমেন্ট অফ ফিনান্স গত ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছে।’
নির্দেশনামায় পরিবহণসচিবের সংযোজন, ‘চলতি পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের সব দপ্তরের কর্তাদের বলা হচ্ছে, তাঁরা যেন পরিবহণ ডিরেক্টরেটের ডিরেক্টরের কাছে ১৫ বছরের বেশি পুরোনো গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা বা সেগুলিকে ছাঁট বা স্ক্র্যাপে পরিণত করার জন্য সরকারি ভাবে আবেদন করেন।’ পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই পুরোনো গাড়ি বাতিল করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
তবে এই নির্দেশ ঘিরে চিন্তায় পড়েছেন বিভাগীয় আধিকারিকরা। যেমন, স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তার কথায়, ‘আমাদের হাজার খানেক গাড়ি বাতিল করতে হবে। এর মধ্যে সাধারণ যান ছা়ডাও রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স বা রক্ত পরিবহণের গাড়িও। ফলে, পুরোনো যানের বদলে নতুন গাড়ির সংস্থানের ব্যবস্থা- এই অন্তর্বর্তিকালীন সময় সামাল দেওয়া রীতিমতো ব়ড চ্যালেঞ্জ।’
তবে পরিবহণ দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার আশ্বাস, ‘একলপ্তে সব গাড়িই বাতিল হয়ে যাচ্ছে, এমন নয়। ধাপে ধাপে তা করা হবে। আর বাতিলের জায়গায় সব গাড়িই যে নতুন কিনতে হবে, তা-ও নয়।’ ওই আধিকারিক বলেন, ‘সরকারি দপ্তরে তো ভাড়া গাড়ি ব্যবহারের চল রয়েছেই।’ তিনি জানান, পুরোনো গাড়িগুলি ছাঁট বা স্ক্র্যাপে পরিণত করার ব্যাপারেও সরকার আগাম চিন্তাভাবনা করেছে বলে তিনি জানান।